ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে ঘরে বসে কিভাবে টাকা উপার্জন করা যাই

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে বর্তমানে সারা বিশ্বে অনেকেই ঘরে বসেই লাখ টাকা ইনকাম করছে। সারা বিশ্বে নেট দিনিয়ার অগ্রগতির ফলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিগত ব্যবসা মালিকরা তাদের প্রতিদিনের

কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অন্যকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকেন। আপনি চাইলে এই প্রফেশনটিকে কাজে লাগিয়ে ঘরে বসে স্বাচ্ছন্দে অর্থ বর্জন করতে পারেন

পেজ সূচিপত্রঃ ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে টাকা উপার্জন

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট আসলে কি

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হল এমন একটি প্রফেশন যা যে কেউ পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে বিভিন্ন প্রশাসনিক টেকনিক্যাল বা ব্যবসা-বাণিজ্যের অভ্যন্তরের কাজ করে থাকেন আসলে এই কাজের জন্য কোন বাধা ধরা নেই যে যার মত করে ক্লায়েন্টদের কাজ করে দিলেই হয় অথবা বিভিন্ন কোম্পানির

বিভিন্ন সময় অনুযায়ী অর্থাৎ তাদের নিজস্ব দেশের দাপ্তরিক সময় অনুযায়ী কাজ করতে হয় যেহেতু আপনি ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট মানে অন্য কোম্পানির হয়ে কাজ করবেন কিন্তু সেটা আপনি আপনার ঘরে বসে করবেন আর এই কাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে ও যোগ্য ব্যক্তি হয়ে উঠতে হবে।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হলো যে কাজগুলি সাধারণত আপনাকে বেশির ভাগ করতে হয় তা হলো ইমেইল ম্যানেজমেন্ট, ডাটা এন্ট্রি, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, গ্রাহক সেবা এবং এরকম আরো অনেক ধরনের কাজে যেগুলো অন্যের হয়ে অর্থাৎ অন্য কোম্পানির হয়ে আপনি কাজ করবেন


ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হওয়ার জন্য নিজেকে দক্ষ করার কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ সমূহ।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ করার জন্য আমাদেরকে কিছু নির্দিষ্ট কাজ অবশ্যই জানতে হয় যে কাজগুলি করার মাধ্যমেই আমরা আসলে ক্লায়েন্টদের কাজগুলি করে থাকবে যে কাজগুলি তারা নিজেরা না করে আমাদেরকে দিয়ে করাবে তাদের অফিসিয়াল কাজ আর সে কাজগুলি নিম্নে বলে দেয়া হলোঃ
  • মাইক্রোসফট অফিস ( Microsoft Office )
  • মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ( Microsoft Word )
  • মাইক্রোসফট এক্সেল ( Microsoft Excel )
  • মাইক্রোসফট এক্সেল ( Microsoft Access )
  • মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট ( Microsoft Power Point )
ভার্চুয়াল অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে কাজের জন্য মাইক্রোসফট অফিস ভালোভাবে জানা প্রয়োজন কেননা অনেক সময় ক্লাইন্টরা জব পোস্টে লিখে দিয়ে থাকে যে উপরে উল্লেখিত কাজগুলি অবশ্যই জানতে হবে। এদের মধ্যে অন্যতম হলো ওয়ার্ডের মাধ্যমে একটি দপ্তরের বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্টস

লিখে রাখতে হবে এবং এক্সেল এর মাধ্যমে অফিসের বিভিন্ন ধরনের অর্থের লেনদেন হিসাব-নিকাশ গুলো এক্সেল এ রাখতে হবে আবার অফিসে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনীয় ডাটা গুলো সুবিন্যস্ত এবং নিরাপদে দীর্ঘদিন সংগ্রহ করার জন্য মাইক্রোসফট অ্যাক্সেস এর প্রয়োজন হয়। আর এই সমস্ত ডাটাগুলি সুবিন্যস্ত ভাবে অফিসের বিভিন্ন মিটিং এ সবার সামনে উপস্থাপন করার জন্য পাওয়ার পয়েন্ট ব্যবহার করা হয় 

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে কাজ শুরু করার পদক্ষেপসমূহ

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে কাজ শুরু করার জন্য আপনাকে সফলতার শীর্ষে যাওয়ার জন্য অবশ্যই কিছু কার্যকরী পদক্ষেপসমূহ অবলম্বন করতে হবে যেগুলো আপনার দক্ষতা বাড়াবে এবং ক্লাইন পেতে সাহায্য করবে আর সেগুলি নিচে বলে দেয়া হলোঃ

  • কম্পিউটারের উপর ভাল দক্ষ হতে হবে
  • টাইম ম্যানেজমেন্ট
  • কাস্টমার সেবা

কম্পিউটারের উপর ভাল দক্ষ হতে হবেঃ কম্পিউটার উপর ভালো দক্ষতা অর্জন করতে হবে অর্থাৎ আপনি যেন একটি অফিসের কাজ করতে কম্পিউটারের যে ধরনের কাজগুলো জানা দরকার সেগুলো সবগুলোই আপনাকে জানতে হবে আপনি যেন কম্পিউটার চালাতে পারেন এবং কম্পিউটারের বিভিন্ন কাজ যেমন মাইক্রোসফট অফিস গুগল ড্রাইভ এবং অন্যান্য সফটওয়্যার এর ওপর ভালো দক্ষতা অর্জন করতে হয়।

টাইম ম্যানেজমেন্টঃ আপনি যেহেতু একটি কোম্পানির হয়ে কোন ক্লায়েন্টের বা কাস্টমারের কাজ করে দিবেন সেহেতু একজন কাস্টমার তার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তার কাজ বুঝে নিবে তাই আপনার সঠিক সময় সঠিক কাজ কাস্টমারকে বুঝি দেয়ার জন্য আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা থাকতে হবে।

কাস্টমার সেবাঃ কাস্টমারকে খুশি করার মাধ্যমে আমরা কাস্টমারকে ধরে রাখতে পারি দীর্ঘ সময় ধরে তার অন্যতম একটি দিক হলেও কাস্টমারকে সঠিক সময় সঠিক কাজ দিতে হবে এবং তাদের সাথে অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও ভক্তি প্রদর্শন করতে হবে এবং তাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হলে যত দ্রুত সম্ভব সমাধানের জন্য এগিয়ে আসা যাতে করে কাস্টমার নিজে থেকে আপনার প্রতি খুশি হয়ে যায় আর এটাই হলো কাস্টমার সেবা

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর জন্য আরো কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ

আপনি যদি এই কাজে নিজেকে আরও বেশি দক্ষ করে তুলতে চান তাহলে আপনাকে এ কাজ গুলির পাশাপাশি আরও কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ বা আরো কিছু এক্সট্রা দক্ষতা অর্জন করতে হবে বা নতুন কিছু কাজ আমাদেরকে জানতে হবে বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং অফিস ম্যানেজমেন্ট এর জন্য যে

কাজগুলি জানতে হবে সেগুলো হল অফিশিয়াল ইমেইল লেখা, ইমেইল রিসিভ ও ইমেইলে রিপ্লাই দিয়ে কাস্টমারের সাথে তা আপনার ক্লাইন্টকে অবহিত করা যে কাস্টমার কি ধরনের সেবা সমূহ চাচ্ছে আপনার কোম্পানি বা ব্যবসা থেকে ,এভাবে আপনি আপনার কোম্পানিকে লোকাল ক্লায়েন্টদের সাথে আপটুডেট রাখতে পারেন।

এই কাজের জন্য কিছু নির্দিষ্ট টুলস ব্যবহার করা

এই কাজ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই কিছু নির্দিষ্ট টুলস ব্যবহার করতে হবে যে টুলস গুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার ক্লায়েন্টের কাজ গুলো করবেন। আপনি কি জানতে চান টুলস গুলো কি ? চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক টুলস গুলো কি যেগুলি নিজে আপনাকে বলে দেয়া হলোঃ

  • কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট যোগাযোগ
  • কমিউনিকেশন টুলস
  • প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট টুলস
  • ফাইল শেয়ারিং

কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট যোগাযোগঃ আপনি যেহেতু বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য এক প্রান্তের ক্লায়েন্টের কাজ করবেন সেহেতু আপনার কম্পিউটারের কনফিগারেশন খুব ভালো হতে হবে কমপক্ষে ২.৫ জিবি প্রসেসর এবং ৮ জিবি র‍্যাম হতে হবে এবং তার সাথে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকতে হবে

কমিউনিকেশন টুলসঃ ক্লান্তের কাজ করার জন্য আপনাকে ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগের জন্য কিছু টুলস ব্যবহার করতে হবে যে টুলস এর মাধ্যমে আপনি ক্লায়েন্টের সাথে এবং ক্লায়েন্টের কাস্টমারের সাথে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখতে পারেন টুলস গুলি হল স্কাইপি, জুম এবং ইমেইল ব্যবহারের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতে পারেন

প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট টুলসঃ প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট টুলস গুলি ব্যবহার করতে হবে যেমন, গুগল কপি, ট্রলো এবং আসানা এর মত প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট টুলস ব্যবহার করতে হবে

ফাইল শেয়ারিংঃ ওয়েব ট্রান্সফা, গুগল ড্রাইভ ড্রপবক্স এর মত ফাইল শেয়ারিং টুলস ব্যবহার করতে জানতে হবে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার ক্লায়েন্টের কাজগুলো খুব সহজে ক্লায়েন্টকে বুঝিয়ে দিতে পারব।

পোর্টফোলিও ও রিজিউম তৈরি করা

আপনার নিজেকে কাস্টমারের কাছে তুলে ধরার জন্য একটি উপযুক্ত পোর্টফলিও এবং রিজিউম তৈরি করুন যার ফলে আপনার লাইনটা আপনার সম্বন্ধে এবং আবার আপনার দক্ষতা সম্বন্ধে অবগত হতে পারে।

পোর্টফলিওঃ যুব উপযোগী পোর্টফোলিও তৈরি করুন যেখানে আপনার কাজের ধরন এবং পরিকল্পনা ও দক্ষতা প্রদর্শিত হয়।

রিজিউমঃ একটি আপডেটেড রিজিউম তৈরি করতে হবে যেখানে আপনার যোগ্যতা অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা সম্বন্ধে বিস্তারিত বর্ণনা থাকবে।

 অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে সফল হওয়ার কিছু টিপস

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে আপনি যেখানে কাজ করেন না কেন আপনাকে সফল হতে গেলে কঠোর পরিশ্রমী ও পাংচুয়াল হতে হবে। অর্থাৎ সময়ের কাজ সময় করতে হবে এবং কোন কাজ যেন কোন কারনে থেমে না থাকে যেভাবেই হোক যত পরিশ্রম হোক না কেন আপনাকে আপনার কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে কাজ করতে হবে। সফল হওয়ার কিছু নির্দিষ্ট টিপস নিম্নে প্রণীত করা হয়

  • টাইম ম্যানেজমেন্ট টুলস
  • ডেট লাইন মেনে চলা
  • প্রোডাক্টিভ রুটিন

টাইম ম্যানেজমেন্ট টুলসঃ টাইম ম্যানেজমেন্ট টুলস ব্যবহার করতে হবে যেমন ধরুন ট্রেলো, আসানা এবং গুগল ক্যালেন্ডার। এগুলোই ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আপনার কাজগুলো সঠিক সময়ে করে নিতে পারবেন।

ডেট লাইন মেনে চলাঃ ক্লাইন্টকে খুশি রাখতে অবশ্যই আপনাকে ক্লায়েন্টের দেয়া ট্রেড লাইন মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে যাতে কাস্টমার আপনার উপর খুশি না হয়

প্রোডাক্টিভ রুটিনঃ আপনি একটি প্রোডাক্টের রুটিন তৈরি করুন যে কোন সময় আপনি কাজগুলো করে দিবেন ক্লায়িনকিং এবং এই রুটিন এর মাধ্যমেই আপনি আপনার কাজগুলো কিন্তু সঠিক সময় কাস্টমারকে করে দিতে পারবেন তাই কাজের রুটিন মেন্টেন করাটা খুবই জরুরী একটি ব্যাপার।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে কাজ করার জন্য কাজের স্থান নির্বাচন

হয়ে কাজ করার জন্য অবশ্যই আপনাকে সুন্দর মনোরম একটি কাজের পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে আপনি আপনার কাজগুলো করার জন্য নিজেকে কাজের প্রতি উজাড় করে দিতে পারব যার ফলে আপনার কাজে কোন ধরনের কোন বেকার ঘটবে না বা কোন ধরনের বিপত্তি ঘটবে না।

আপনাকে প্রথমে একটি শান্ত পরিবেশ নির্বাচন করতে হবে যেখানে আপনি একা থাকবেন বা যাদেরকে নিয়ে কাজ করতে চান শুধুমাত্র তাদেরকে নিয়েই কাজের জন্য আমাদেরকে জায়গা তৈরি করতে পারেন আর এ কাজ করার জন্য আপনার নির্দিষ্ট কিছু প্রয়োজন হবে যেগুলো আপনাকে ব্যবহার করতে হবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে নিজেকে ফিট ও মেন্টাল প্রশান্তির জন্য ব্রেক নিতে হবে নিয়মিত ব্রেক নিলে আপনি কাজের প্রতি আরো আগ্রহী এবং নিজেকে কাজের জন্য খুব বেশি উজাড় করতে পারবে সের জন্য আপনি মাঝে মাঝে ব্যায়াম করতে পারেন যাতে করে আপনি স্বাস্থ্যের দিক দিয়ে ফিট থাকতে পারেন।

উপসংহার

ভাবছো ম্যাসিস্ট্যান্ট এমন একটি ডিজিটাল দুনিয়ার ঘরে বসে ইনকাম করার পদ্ধতি যেটি আপনি চাইলেই এ কাজের জন্য নিজেকে নির্বাচন করতে পারে এ কাজগুলি শিখে ঘরে বসে খুব সহজে ইনকাম করতে পারে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য যে কোন প্রান্তে অন্য একটি কোম্পানি অর্গানাইজেশন বা কোন ব্যক্তিগত পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের হয়ে আপনি আপনার ঘরে বসেই তাদের কাজগুলো করে দিয়ে খুব সহজে ইনকাম করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শিক্ষাই আলোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url