ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় - ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় এই বিষয়ে বর্তমান সময়ে জানার আগ্রহ
আমাদের মধ্যে অনেকেরই দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই ফলটি বাইরের দেশের একটি ফল যা
আমাদের দেশেও বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আর যার ফলে আপনি
আসল ড্রাগন ফল খেতে গিয়ে কি আবার বিষ খাচ্ছেন কিনা? কোন ধরনের ড্রাগন ফল
খাবেন, ড্রাগন ফল খেলে আপনার শরীরে কি কি পুষ্টিগুণ আপনি পাবেন এসব বিষয়ে আমি
আপনাদের সাথে আমার এই আর্টকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পেইজ সূচিপত্রঃ ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়
- ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়
- ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
- ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম
- ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
- ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ড্রাগন ফল
- আসল ড্রাগন ফল চেনার উপায়
- লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা
- ড্রাগন ফলের ক্ষতিকারক দিক
- গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা
- বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
- শেষ কথাঃ ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়
ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়
ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে জেনে তারপরে এই ফলটি খাওয়া খুব জরুরী।
কারণ এই ফলটি প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদানে ভরপুর হওয়ার ফলে এটিকে সময়মতো
খেলে শরীরে বেশ এনার্জি পাওয়া যায়। প্রত্যেকটি কাজেরিই নির্দিষ্ট কিছু সময়
হয়ে থাকে আর সেই কাজেগুলো যদি আপনি নির্দিষ্ট সময়ে নিয়ম মেনে করে থাকেন
তাহলে বেশি উপকার লাভ করা যা। এজন্য কথায় আছে " সময়ের এক ফোড়ন,
অসময়ের দশ ফোড়ন "। অর্থাৎ যে কাজটি যেসময়ের সে কাজটি সে সময়ে করলেই
বেশি লাভবান হওয়া যা। এমন কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো নিয়ম-কানুন ও উপযুক্ত
সমযয়ে যদি করা হয় তাহলে সে বিষয়গুলো
থেকে ফল পেতে বেশি সময় লাগে না। যেহেতু এই ড্রাগন ফলটি প্রচন্ড পরিমাণে
পুষ্টিগুণে ভরপুর তাই এই ড্রাগন ফলের যদি আপনি পুরো পুষ্টি ও গুণগুলি আপনি নিতে
চান তাহলে এই ফলটিকে আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ে খেলে মুহূর্তেই আপনাকে চাঙ্গা ও
শক্তিশালী করে তুলতে সক্ষম হবে। আপনি যদি প্রতিদিন নাস্তার সময় এই ফলটিকে
খেয়ে থাকেন তাহলে এই ফলটি আপনার শরীরকে এনার্জি করে তুলবে। আবার আপনি চাইলে
এটিকে দুপুরে আপনার খাবারের পরে মিষ্টিও হিসেবে খেতে পারেন। আর যখন আপনি খুব
বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন তখন আপনি এই ফলটিকে দুধের সাথে ব্লেন্ড করে জুস
বানিয়ে খেলে তাৎক্ষণিকভাবে আপনি চাঙ্গা হয়ে উঠবেন।
ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানা খুব বুদ্ধিমানের কাজ হবে কারণ
আপনি যে ফলটি খাবেন সে ফলের পুষ্টিগুণ সম্বন্ধে জানলে আপনি কিছুটা ডাক্তারের
মতো হয়ে যেতে পারবেন। অর্থাৎ পুষ্টিগুণ হলো এমন একটি উপাদান যেগুলো আপনার
শরীরের বিশেষ কোন ধরনের সমস্যা দূর করতে পারে। কোন ফলে কোন পুষ্টিগুণ রয়েছে
এবং কোন উপাদান রয়েছে সে সম্বন্ধে ধারণা থাকলে আপনার শরীরের কোন সমস্যা দেখা
দিলে তখন আপনি কোন ফলটি খেলে সে সমস্যা সেরে যাবে তা আপনি নিজেই উপলব্ধি করে
নিজেই সমাধান করতে পারবেন তাও আবার প্রাকৃতিক উপায়ে। ড্রাগন ফল বেশ সুস্বাদু
এবং মুখরোচক একটি ফল যে ফলে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিতে পরিপূর্ণ রয়েছে। এই ফলে
রয়েছে মাইকো নিউ ফ্রেন্ড এবং বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যা এখন আমি আপনাদের সাথে
বিস্তারিত বর্ণনা করব।
- ক্যালোরিঃ ড্রাগন ফলে রয়েছে ক্যালোরি, প্রতি ১০০ গ্রাম ড্রাগনে রয়েছে ৫০ থেকে ৬০ ক্যালরি।
- ফাইবারঃ এর ফলে উচ্চমাত্রার ফাইবার রয়েছে। প্রতি ৩ গ্রাম ড্রাগনে রয়েছে ১০০ গ্রাম ফাইবার যা আপনার হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে সক্ষম হয়।
- চর্বিঃ এই ফলটির মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে চর্বি এর প্রতি ১ গ্রামে ১০০ গ্রামের কিছু কম চর্বি রয়েছে।
- শর্করাঃ এর ১০০ গ্রাম ওজনের প্রায় ১১ থেকে ১২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে যাকে কার্বোহাইড্রেটের একটি ছোটখাটো উৎস করে তোলে যা প্রধানত ফ্ররুক্টোজের মতো প্রাকৃতিক শর্করা থেকে পাওয়া যাই।
- প্রোটিনঃ ড্রাগনে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায় বিষয়টি কিন্তু এমন নয়, তবে প্রতি ১ গ্রামে পাওয়া যায় প্রায় ১০০ গ্রাম প্রোটিন।
- ক্যালসিয়ামঃ এর ফলে রয়েছে স্বল্প পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা আপনার দেহের হাড় গঠনে সহায়তা করে এবং মাংসপেশীর কার্যকারিতার জন্য অত্যাবশ্যক একটি উপাদান।
- ম্যাগনেসিয়ামঃ এই উপাদানটি মাংসপেশি এবং স্নায়ুর কার্যকারিতার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান যা প্রতি ১৮ গ্রাম ড্রাগন ফলে ১০০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে।
- ভিটামিন সিঃ এই ফলের অতি মূল্যবান একটি উপাদান আর সেটি হল ভিটামিন সি প্রতি ৩ গ্রাম হলে প্রায় ১০০ গ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়।
- আয়রনঃ এই ফলের অন্যতম বড় উৎস হলো এই আয়রন যা আপনার দেহের লাল রক্ত কণিকা উৎপাদনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম
ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম নিয়ম সম্পর্কে আমি এখন আপনাদের বিস্তারিত আলোচনা করব।
এই ফলটি যেহেতু আমাদের দেশের বাইরের একটি ফল তাই এই ফলটি খাওয়ার নির্দিষ্ট
কিছু নিয়ম আমাদের জেনে নেয়া খুবই জরুরী। এই ফলটিকে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে
ধুয়ে নেয়া হয়ে গেলে এই ফলটিকে মধ্যবর্তী অবস্থান থেকে দুই ভাগে ভাগ করে
নিতে হবে। ভাগ করা হয়ে গেলে এই ফলের শক্ত চামড়াটিকে টেনে আলাদা করলে ভেতরের
নরম অংশটুকু আপনি পেয়ে যাবেন। তারপর
আপনি আপনার পছন্দমত সাইজ করে কেটে নিতে পারব। অথবা আপনি চাইলে দুই ভাগ করার পরে
এই ফলটিকে চামড়া লেগে থাকা অবস্থায় চাকু দিয়ে কিউব আকৃতির ডিজাইন করে কেটে
নিয়ে আপনি কাটা চামচ দিয়ে উপভোগ করতে পারবেন সুন্দর সুস্বাদু এই ফলটি। যদি
আপনি এটিকে প্রতিনিয়তই কেটে খেয়ে কিছুটা অসাচ্ছন্দ্যবোধ করলে আপনি মাঝে মাঝে
খাবার পদ্দতি পরিবর্তন করতে পারেন। যেমন ধরুন আপনি এটাকে জুস বানিয়ে খাবেন
তাহলে আপনার সাধের কিছুটা
পরিবর্তন আনবে যার ফলে এটিকে আপনি আরো নতুন ভাবে উপভোগ করতে পারবেন। জুস
বানানোর জন্য আপনি এটিকে দুধের সাথে ব্লেন্ড করে জুস বানিয়ে খাবেন। আবার আপনি
চাইলে এটিকে বিভিন্ন ফলের সাথে ব্লেন্ড করে মিক্সড ফ্রুট জুস বানিয়ে খেতে
পারেন। আবার এটিকে আর একটু অন্যভাবে উপভোগ করার জন্য আপনি চাইলে সালাদ বানিয়ে
খেতে পারেন অথবা দইয়ের সাথে ছোট ছোট কিউব করে কেটে নিয়ে খেলে খুব স্বাদ পাওয়া
যায়।
ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা এ বিষয়ে আমাদের প্রত্যেকের জানা খুবই প্রয়োজনীয়
একটি বিষয়। এই ফলে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে আর এই ফাইবার একটি
স্বাস্থ্যকর পরিপাকতন্ত্র পুনর্গঠনের জন্য অপরিহার্য অংশ। আপনার পরিপাকতন্ত্র
অর্থাৎ হজম ক্রিয়াকে সর্বদা সক্রিয় রাখতে এটি সাহায্য করে। আর আপনার শরীরের
কোষ্ঠকাঠিন্য না থাকলে আপনার হজম শক্তি ভালো থাকবে। তাই আপনার শরীর দ্রুত খাদ্য
থেকে প্রয়োজনমতো পুষ্টি উপাদান নিতে পারবে যার ফলে আপনি সুস্থ থাকব। এই ফল
আপনার দেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে যার
পরিণতিতে আপনার সুস্থ হার্টের নিশ্চয়তা প্রদান করে। এতে যে ফাইবারের উপাদান
রয়েছে তা আপনার খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এবং ভালো কোলেস্টেরল
বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে তুলনামূলক কম ক্যালরি এবং
উচ্চফাইবার থাকার ফলে আপনার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চমৎকার কাজ করে। এই
ফলটি তাই আপনার ওজন কমাতে এ ফলটি প্রতিনিয়ত খেলে আপনি ফলাফল পাবেন।
ড্রাগন ফলে রয়েছে ভিটামিন এ, বি১, বি২, বি৩, ভিটামিন সি, আয়রন এবং
ক্যালসিয়াম এর মত শক্তিশালী পোস্টের উপাদান।যেহেতু এই ফলে ভিটামিন সি রয়েছে
যা আপনার দেহের ক্লোজেন উৎপাদনে
আরো পড়ুনঃ সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং এটি আপনার স্বাস্থ্যকর তারুণ্যময় ত্বকের
জন্য বেশ ভূমিকা রাখে। এ ফলে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পানির উপাদান
আপনার ত্বককে হাইড্রেটেড করে তোলে যা আপনার ত্বকের বলিরেখা এবং শুষ্ক
রেখার মত বার্ধক্যের লক্ষণগুলোকে দিন দিন কমিয়ে ফেলে। যার ফলে আপনি প্রতিনিয়ত
আপনাকে উজ্জ্বলতা এবং তারুণ্যতা অনুভব করবেন এবং এর ফলে আপনার বয়সের তুলনায়
আপনার চেহারা অনেক উজ্জ্বল দেখাবে। এই ফলে যেহেতু ক্যালসিয়াম এবং
ম্যাগনেসিয়াম এর মত পদার্থ রয়েছে যা আপনার শক্তিশালী হাড় এবং দাঁতকে মজবুত
রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ড্রাগন ফল
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ড্রাগন ফল এ বিষয়ে এখন আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব।
ডায়াবেটিস রোগটি বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে বেশ ভয়াবহ একটি রূপ ধারণ করেছে।
কেননা এই রোগটি প্রতিটি ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে। আর যদি কারো শরীরে এই রোগ থাকে
তাহলে সেই রুগী ধীরে ধীরে আরো বহু জাতিগক রোগে আক্রান্ত হওয়ার দিকে ধাবিত হতে
থা। যদি কারো ডায়াবেটিস হয়ে থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই নিয়ম মাফিক খাওয়া
দাওয়া, নিয়ম মাফিক চলাফেরা এমনকি নিয়ম মাফিক ফলও খেতে হবে।
আর অনেক ডাক্তাররা ডায়াবেটিস রোগীদের ড্রাগন ফল খাওয়ার জন্য বলে থাকে কেননা
এই ফলে অন্যান্য ফলের তুলনায় কম গ্লাইসেমিক পাওয়া যায়। যার অর্থ হয়েছে এটা
পরিমিত খাওয়া হলে এটি রক্তের শর্করার মাত্রার ওপর কম প্রভাব ফেলে। ড্রাগন ফল
খেলে এতে থাকা ফাইবার গ্লুকোজের মাত্রা কে ধির করে রক্তে শর্করার মাত্রা সহনশীল
অবস্থায় নিয়ে আসে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা এ আগ রোগে আক্রান্ত হয়ে
ইনসুলিন করেন তারা যদি নিয়মিত ড্রাগন ফল খান তাহলে ইনসুলিন করার পরে যে ব্যথা
অনুভূত হয় তারা ধীরে ধীরে কমতে থাকে ড্রাগন ফল খাওয়ার জন্য।
আসল ড্রাগন ফল চেনার উপায়
আসল ড্রাগন ফল চেনার উপায় এ বিষয়ে জ্ঞান থাকা আমাদের প্রত্যেকেরই
প্রত্যাবর্ষকীয় একটি বিষয়। এই ফলটি বহুগুনে সাত ও পুষ্টিগুণে ভরপুর থাকার ফলে
এবং দেখতেও আকর্ষণীয় ও লোভনীয় হওয়ার ফলে এই ফলটিকে বর্তমানে মানুষের চাহিদা
অনুযায়ী সমস্ত জায়গায় দেখা যায়। কিছু বছর আগেও যেখানে এই ফলটি শুধুমাত্র
ফেসবুক বা ইউটিউবে দেখা যেত দেশের বাইরের মানুষকে খেতে। কিন্তু এখন এই ফলটি
আমাদের দেশের প্রত্যেকটি জায়গায় পাওয়া যায় এবং আমাদের দেশের মানুষের
বহু আকাঙ্ক্ষিত ও জনপ্রিয় একটি ফল এই ফলটি। তবে তথ্য অনুসারে জানা গেছে ২০১০
সালে এ ফলটি কোন এক ব্যক্তি থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে কিছু সংখ্যক চারা এনে
আমাদের দেশে চাষ শুরু করে। এবং গত ১৪ বছরে এই ফলের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৪০
গুন । এখন আমাদের দেশে বাজারে দেখতে বড় বড় সাইজের যে সকল ড্রাগন ফল পাওয়া
যাচ্ছে তার পুষ্টিগত গুণ নিয়ে রয়েছে নানা মতামত। আমাদের অনেকেই আবার ভাবছেন
যে আমরা আমাদের অজান্তে বিষ খাচ্ছি না তো? এই ফলের চাহিদা বেশি থাকার ফলে বেশ
কিছু
লোকজন এর ফায়দা লুটে নিচ্ছে। যেখানে আগে দেখা যেত ড্রাগন ফলের ওজন ও সাইজ হতো
২০০-২৫০ গ্রাম সাইজের জাবেরে এখন তার ওজন দাঁড়িয়রছে ৯০০ গ্রামে। অর্থাৎ আগে ছোট
ছোট সাইজের ড্রাগন ফল পাওয়া যেত এবং পুরোটাই লাল ড্রাগন ফল পাওয়া যেত। কিন্তু
অসাধু ব্যবসায়ীরা চাষের সময় বেশি বেশি সার এবং কীটনাশক দিয়ে এটিকে সাইজে
অনেক বড় বানিয়ে ফেলেছে আর এখন দেখতে এই ফলটি হয়ে থাকে লাল ও সবুজ
রঙের। অর্থাৎ আপনি যদি ড্রাগন ফল কিনেন তাহলে সেটি ছোট ও লাল রংয়ের দেখে
কিনবেন।
লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা
লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা এই বিষয়ে আমি আপনাদের এখন বিস্তারিত বলতে চলেছি।
ড্রাগন ফলের প্রকারভেদ অনেক রয়েছে তবে কোন ধরনের ড্রাগন ফলে কোন ধরনের
পুষ্টিগুণ বা কি কি উপকারিতা রয়েছে সে সম্বন্ধে আপনি জানলে আপনার যদি শরীরে
কোন বিশেষ ধরনের সমস্যা হয় আর আপনি যদি জেনে থাকেন যে কোন ঘরোয়া ঔষধ বা বিশেষ
ফল খেলে যদি আপনার সেই সমস্যা সেরে যায় তাহলে আপনাকে ডাক্তারের
কাছে গিয়ে অযথা পয়সা খরচ করতে হবে না। তাই আমি আপনাদেরকে এখন বলতে চলেছি লাল
ড্রাগন ফলের বিশেষ পুষ্টিগুণ ও কার্যকারিতা। যেহেতু এই ফলে রয়েছে উচ্চ এন্টি
অক্সিডেন্ট এর সমাহার তাই এই ফলের প্রাণবন্ত উপ্ভোগ লাল মাংসের যুক্ত অংশে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বেটা লাইন। শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা অক্সিটেটিভ
ট্রেস এবং ব্যথা কমায় এমনকি ভবিষ্যতে সংঘটিত
হওয়া যেকোনো রোগ থেকে আপনাকে বাঁচিয়ে কিছুটা সাহায্য করে। এটিতে এমন
কিছু যৌগ রয়েছে যা এইচডিএল অর্থাৎ ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে এবং এলডিএল
অর্থাৎ খারাপ কোলেস্টেরল কে কমিয়ে ফেলে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা
নিয়ন্ত্রোন্ত্র। এবং এই ফলটিতে রয়েছে উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম যা স্বাস্থ্যকর
রক্তচাপের জন্য স্বাভাবিক মাত্রার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে আপনাকে সর্বদা ফিট
রাখে।
ড্রাগন ফলের ক্ষতিকারক দিক
ড্রাগন ফলের ক্ষতিকারক দিক বিশেষ করে খেয়াল রাখতে হবে যে আমরা যদি এই ফলটি
বেশি করে খেয়ে থাকি তাহলে কেবলমাত্র কিছু সমস্যার হতে পারে। প্রত্যেকটি খাবারে
যদি আমরা অস্বাভাবিকভাবে খেয়ে ফেলি হোক সেটা ফল অথবা আমাদের দৈনন্দিন খাবার
যাইহোক না কেন আমরা যদি নিয়মিত না খেয়ে ফেলে অর্থাৎ বেশি পরিমাণে খায় তাহলে
সব খাবারে আমাদের সমস্যা হতে পারে। ঠিক তেমনি এই ফলটি ও যদি কেউ বেশি পরিমাণে
খায় তাহলে কিছু সমস্যা হতে পারে আর তা হলোঃ
- হজম সমস্যাঃ যেহেতু এই ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে এবং এর ফলে বেশি পরিমাণে ফলটি খাওয়া হলে পরবর্তীতে বেশি আপনার শরীরে ফাইবার চলে গেলে হজমের জন্য ক্ষতি করতে পারে। যেমন পেট ফলা ভাব, পেটে গ্যাসের সৃষ্টি হওয়া অথবা ডাইরিয়া হওয়া। উচ্চ ফাইবার যুক্ত এই ফল হওয়ার ফলে বেশি খেয়ে অভ্যস্ত না থাকলে হঠাৎ করে বেশি খেয়ে ফেললে এই সমস্যাটা হতে পারে। তাই আপনার যদি উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার বেশি খেয়ে হজমে সমস্যা হয় তাহলে তা অল্প করেই খাওয়ায় উত্তম।
- এলার্জিজনিত সমস্যাঃ এই ফল খেলে এলার্জির সমস্যা কিছুটা হলেও হতে পারে যদি কারো এ সমস্যা হওয়ার তাহলে তার হার অনেক কম। তবে যদি কারো শরীরে প্রচুর এলার্জির সমস্যা থেকে থাকে তাহলে ড্রাগন ফল বেশি খেলে কিছুটা এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর এই এলার্জি হলে শরীর কিছুটা চুলকাবে এবং জায়গায় জায়গায় কিছু ফুলে যেতে পারে। যদি দেখেন এই ফল খেলে আপনার এলার্জির মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে বা এলার্জি শরীরে ফুটে উঠছে তাহলে এটিকে কম কম খাবেন।
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের প্রত্যেকেরই ধারণা থাকা জরুরী
একটি বিষয়। যদি আমরা এ বিষয়ে জেনে থাকি তাহলে আমাদের আশেপাশে মা-বোনরা যদি
গর্ভবতী হয় তাহলে কিছুটা হলে তাদের উপকারে আসা যাবে। যখন কোন মেয়ে গর্ভবতী হয়
তখন তার পরিবারের প্রত্যেকে চাই সেই মেয়েটিকে সকল ধরনের খাবার খাওয়ানোর জন্য
যাতে করে তার এবং তার পেটে বড় হওয়া বাচ্চাটির যাতে করে সকল ধরনের পুষ্টি পায়
এবং বিকাশ ঠিকমতো হয়। এজন্য এই সময়ে
গর্ভবতী মাকে সকল ধরনের খাবারের সাথে প্রায় সকল ধরনের ফলমূল খাওয়ানো হয়। এই
সময় যদি ড্রাগন ফলকে খাওয়ানো হয় তাহলে এটি অনেক ধরনের পুষ্টিগুণে ভরপুর হওয়ার
ফলে বাচ্চা ও তার মাকে বিশেষ কিছু পুষ্টি দিতে সক্ষম। এই ফলে রয়েছে ভিটামিন সি,
আয়রন এবং ফলেট বিশেষ কিছু মৌলিক পুষ্টিগুণ যা গর্ভবতী মা এবং শিশু বিকাশে
অপরিহার্য। এই ফলে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে এবং এ ভিটামিন সি
মাকে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে এবং এর পাশাপাশি যেহেতু এতে রয়েছে আয়রন যা মায়ের দেহে রক্তের
প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে থাকে যা মা ও শিশুর জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এবং এই আয়রন
যা দেহে লোহিত রক্তকণিকা গঠন করে এবং রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধির সাথে সাথে
গর্ভাবস্থায় অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ পালন করে দেহের কোষ গঠনে। গর্ভাবস্থায় মা ও
শিশুর অধিক যত্ন নেয়ার জন্য মাঝে মাঝেই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার পাশাপাশি উচ্চ
পুষ্টি সম্পন্ন খাবার এবং ফল মাকে দেওয়া খুবই জরুরি। তাই এ সময় গর্ভবতী মাকে
কিছুক্ষণ পরপরই এ ধরনের উৎসব পুষ্টি সম্পন্ন ফলমূল খাওয়ানো উচিত।
বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা গুলো জেনে নেয়া আমাদের বুদ্ধিমানের একটি
কাজ হবে। কেননা বাচ্চাদেরকে যদি সঠিক পুষ্টি সম্মত খাবার না দেয়া যায় তাহলে
তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ থেমে যাবে। আর অনেক বাচ্চারাই আছে যে বেশি পরিমাণে
কোন কিছু খেতে চাই না দিনে দেখা গেল খুবই কম খায় এবং জোরজবস্তি করে খাওয়াতে
হয়। কাজেই বিশেষ করে এই ধরনের বাচ্চাদের পুষ্টি মেইন্টেন করা খুবই দুরূহ ব্যাপার
হয়ে পড়ে। কিছু বাচ্চা যেহেতু খেতে চাই না তাই তারা যখনই খাবার খেতে চাইবে তখনই
যেন বিশেষত অধিক পুষ্টি সম্পন্ন খাবার খাওয়ানো যায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ড্রাগন ফলে যেহেতু ভিটামিন এ, বি১, বি২, বি৩, ভিটামিন সি,ক্যালসিয়াম এবং
আয়রনের মত শক্তিশালী উপাদান রয়েছে। এর পাশাপাশি এতে থাকা ফাইবার যা রক্ত
চলাচলের উন্নতি ঘটায় এবং এটি আপনার শিশুর খাদ্যের তালিকায় রাখা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ খাবারের মধ্যে একটি হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে কমপক্ষে
বাচ্চাদের বয়স এক বছর হওয়ার পর এই খাবারটি দিতে হবে। যদিও অনেক মা তাদের
শিশুদের এই খাবারটি ৬ মাস বয়স থেকেই
দেয়া শুরু করে আর বাচ্চার যদি কোন এলার্জিজনিত সমস্যা না থাকে তাহলে এটা কোন
সমস্যা করে না। এটিতে যেহেতু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তাই এটি আপনার শিশুর
কোষগুলোকে গঠন এবং ক্ষতির হাত থেকে এড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এমনকি এটি আপনার
শিশুর হার্টের জন্য বেশ উপকারী এটি প্রতিনিয়ত আপনার শিশুকে দিলে আপনার শিশুর হাট
জনিত কোন সমস্যা হবে না। এটি আপনার শিশুর হাড, মাংসপেশী, ত্বকের কমলত্ বুদ্ধির
বিকাশ এবং রক্ত সঞ্চালণ স্বাভাবিক রাখতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে এবং এটি
আপনার শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।
শেষ কথাঃ ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়
ড্রাগন ফল যেহেতু বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ ও অন্যান্য আরো পুষ্টিগুণে
ভরপুর একটি ফল আর যে ফলটিকে সুপার ফুডও বলা হয়। এই ফলটি যদি আপনি প্রতিনিয়ত
খাবার অভ্যাস করে থাকেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই থাকে আপনি মুক্ত হতে
পারবেন। কেননা এটি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি করে।
আপনার হৃদপিণ্ড, আপনার চোখ ও আপনার চেহারার কমলতা ইত্যাদির ক্ষেত্রে ব্যাপক
কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এটি প্রতিনিয়ত খেলে আপনার যেভাবে সুস্বাস্থ্য
নিশ্চিত করা হবে ঠিক তেমনি ভবিষ্যতে কোন যেকোনো ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়া
থেকেও আপনার শরীরকে বিরত রাখবে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা
এই ফলটি খেলে জাদুকারি কাজ করবে। এটি আপনার রক্তের সুগার লেভেল কে নিয়ন্ত্রণে
রাখতে সাহায্য করে। এই ফলটি আপনার রক্তের শর্করাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে আর যার ফলে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। তোদের জন্য এটি বেশ উপকারী একটি ফল কেননা এক বছর
বয়সের পরের শিশুদের খাওয়ালে এটি তাদের হার্ড ভালো রাখে শরীর রক্ত চলাচল
স্বাভাবিক মাত্রায় রাখে এবং তাদের চেহারা নরম ও তুলে রাখতে সাহায্য করে। আমরা
যদিও জানি যে কোন খাবারই বেশি খাওয়া ঠিক না বেশি খেলে তা আমাদের ক্ষতি করতে
পারেন। ঠিক তেমনি এই ফলটিও যদি আপনি প্রতিনিয়ত খেতে খেতে আপনার শরীরে কোন
ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে এটি খাওয়া কমিয়ে দিবেন।
শিক্ষাই আলোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url