সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম
সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব সজনে
পাতা কিভাবে খাবেন, কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে, কি রয়েছে এতে উপকারিতা এবং
অপকারিতা, এটি খেলে আপনার শরীরে কি প্রভাব পড়ে আবার এটি খেলে ত্বকের
কি উপকারিতা হয়। সজনে পাতা আমাদের দেশের গ্রাম বাংলার অতি জনপ্রিয় একটি সবজির
নাম। এটি বিভিন্নভাবে রান্না করে খাওয়া হয়। সজনে এর বৈজ্ঞানিক নাম হলো Moringa
Oleiferafer এবং এই সজনে পাতাকে বৈজ্ঞানিকরা সুপার ফুড হিসেবে অভিহিত করেছেন
পেজ সূচিপত্রঃ সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম
- সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম
- কিভাবে খাবেন সজনে পাতা
- কি কি পুষ্টিগুণ আছে সজনে পাতায়
- ডায়াবেটিস রোগীর সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম
- সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার উপকারিতা
- সজনে পাতা খাওয়ার অপকারিতা
- সজনে পাতা খেলে কি হয়
- দাম কত সজনে পাতার গুড়ার
- ত্বকের যত্নে সজনে পাতার ব্যবহার
- শেষ কথাঃ সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম
সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম
সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাই তাই আজ আমি আপনাদের এ
বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। সজনে পাতায প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি সবজি। তাই
এটিকে কিছু নিয়ম মেনে খাওয়া খুবই জরুরী। আর তাছাড়া চিকিৎসকরা বলে থাকেন যে কোন
খাবারই নিয়মের বাইরে খাওয়া ঠিক নয় এবং বেশি খাওয়া ঠিক নয় আর নিয়ম না মেনে
খেলে আমাদের ক্ষতি হতে পারে। তাই এটি কিছু নিয়ম মেনে খাওয়ার পদ্ধতি গুলো
আপনাদের সাথে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। সজনে পাতার পাউডার আপনি চাইলে সকালে খেতে
পারেন, দুপুরে খেতে পারেন এমনকি রাতেও খেতে পারে এটিকে যদি আপনি খালি পেটে খান
তাহলে বেশি উপকার
পাওয়া যায়। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা খালি পেটে সজনে পাতার
পাউডার খেলে তাদের ডায়াবেটিস পুরোপুরি কন্ট্রোলে থাকে। তবে আপনি যখনই যতটুকুই
খান না কেন খেয়াল রাখবেন যে আপনার কোন প্রবলেম হচ্ছে কি না। অর্থাৎ এটি আপনার
শরীরের কোন ক্ষতি করবে না তবে বেশি খেলে ক্ষতি হতে পারে তাই পরিমিত খাব। আপনি
চাইলে এই পাউডারটি যে কোন খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে পারবেন। প্রতিদিন আপনি ৫০
গ্রাম সজনে পাতার পাউডার খাবেন। একসাথে ৫০ গ্রাম খেলে আপনার হজম করতে সমস্যা
হচ্ছে বলে যদি মনে হয়, তাহলে অল্প অল্প করে সারাদিনে সর্বমোট ৫০ গ্রাম খাবেন।
কিভাবে খাবেন সজনে পাতা
কিভাবে খাবেন সজনে পাতা? এই প্রশ্নের উত্তরে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব কি
কি পদ্ধতি অবলম্বন করে সজনে পাতা খেতে পারেন অর্থাৎ কিভাবে সজনে পাতা খাওয়া
যায়। সজনে পাতা যেহেতু সুপার ফুড নামে অবহিত একটি খাবার তাই এটির বিভিন্ন দেশে
বিভিন্নভাবে খাওয়া হয়ে থাকে। আমাদের দেশের মানুষ অনেকে জানেই না যে শরীর পাতাকে
কত ভাবে খাওয়া যায়। তা শুধু জানে যে এটাকে রান্না করে শাক বানিয়ে খাওয়ার
পদ্ধতিটি তবে আরো কিছু যে পদ্ধতি রয়েছে বা আপনি কিভাবে খাবেন সজনে পাতা থেকে তা
নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
-
শরবত বানিয়ে খাওয়াঃ আপনি যদি এই সজনে পাতার গুড়াকে মধু এবং লেবু এবং
পানি মিশিয়ে একটি স্বাস্থ্যকর সর্ব বানিয়ে খান তাহলে এটি আমাদের অনেক
উপকারে আসে। নিয়মিত এই শরবত খেলে আপনার শরীরের ওজন ধরে রাখবে এবং আপনার
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।
-
সালাত বানিয়ে খাওয়াঃ আমরা সকলেই জানি সালাত খুবই স্বাস্থ্যকর একটি খাবার যা
আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে এবং যেটি আবার বায়োলজিক্যাল প্রপার্টিজও
নিয়ন্ত্রণ করে। অনেক মানুষই সালাতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য না জানি কত
ধরনের কেমিক্যাল যুক্ত সশ মিশিয়ে থাকেন। তবে আপনি এই সমস্ত কেমিক্যাল যুক্ত
কোন কিছু না মিশিয়ে মরিঙ্গা পাউডার ব্যবহার করলে যেমন এর সৌন্দর্য বাড়ে
তেমন এর পুষ্টি কোন বেড়ে যায়।
-
চায়ের সাথে মিশে খাওয়াঃ আমাদের দেশে মানুষ সজনে পাতাকে সাধারণত শাক
বানিয়ে খেতে অভ্যস্ত তবে অন্যান্য দেশে এটিকে চায়ের সাথে মিশে খেয়ে থাকেন।
সজনে পাতার পাউডারকে চায়ের সাথে মেশালে এটি চায়ের সাথে মিশে চাকরি করে তোলে
প্রচণ্ড রকমের উপকারী একটি পানীয়।
-
মশলা বানিয়ে খাওয়াঃ সজনে পাতার গুড়া আপনি যদি রান্না করার সময় মসলা
হিসেবে ব্যবহার করেন তাহলে এতে থাকা পোস্ট যেগুন আপনার খাদ্যে অতিরিক্ত
পুষ্টিগুণের মাত্রা যোগ করে। যার ফলে আপনার যে কোন খাবারে হয়ে ওঠে দ্বিগুণ
পুষ্টিগুণ সম্পন্ন।
-
ভাতের সাথে মিশিয়ে খাওয়াঃ এই সজনে পাতার গুড়া খেয়ে যদি আপনি ভাতের
সাথে মিশে খান তাহলে আপনার ভাত থেকে পাওয়া শক্তি যেটি দ্বিগুণ করে তুলবে এই
সজনে পাতার পাউডার।
তবে সজনে পাতাকে আমাদের দেশের মানুষ বিশেষ করে গ্রামের মানুষ শাক বানিয়ে খেতে
বেশি পছন্দ করে এবং এটি বেশ স্বাদযুক্ত একটি সবজি। তবে এটি কি রান্না করে খেলে
কিছুটা পুষ্টিগুণ কমে যায় আপনি চাইলে এটিকে সেদ্ধ করে খেতে পারেন তাহলে আপনি
এতে থাকা পুরোপুরি পুষ্টিগুন পাবেন।
কি কি পুষ্টিগুণ আছে সজনে পাতায়
কি কি পুষ্টিগুণ আছে সজনে পাতায় এ বিষয়ে পুরোপুরি জ্ঞান থাকা আমাদের অতীব
জরুরী। সজনে পাতা বেশ জনপ্রিয় একটি খাবার হ্যাঁ সত্বেও আমাদের মধ্যে অনেকেই
জানিনা যে এই পাতায় কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে আমরা যদি এই পুষ্টিগুণ
গুলি সম্বন্ধে ধারণা পায় তাহলে হয়তো বা আমরা এই খাবারটিকে আর অবহেলা না করে
নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখবো। আর এটিকে আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখলে
আমাদের দেহ রোগমুক্ত থাকবে এবং সুস্বাস্থ্যের পরিণত হবে। এই পাতায় রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ এবং ভিটামিন। এটিতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম,
পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিংক, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এর পাশাপাশি রয়েছে
প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট। এই পাতায় অনেকগুলো পুষ্টি বিদ্যমান থাকার কারণে
এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
এই পাতার প্রতি ১০০ গ্রামে যে পুষ্টির উপাদানগুলো থাকে- স্নেহ ১.৪০ গ্রাম,
শর্করা ৮.২৮ গ্রাম, ফাইবার ২.০ গ্রাম, প্রোটিন ৯.৪০ স্নেহ ১.৪০ গ্রাম, লৌহ ৪.০০
স্নেহ ১.৪০ মিইলগ্রাম, সোডিইয়াম ১৯ মিইলগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৮৫ মিইলগ্রাম,
ভিটামিন সি ৫১.৭মিইলগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৪৭ মিইলগ্রাম, ভিটামিন এ ৩৭৮
মাইক্রোগ্রাম এবং সোডিয়াম ১৯ মিইলগ্রাম পুষ্টি প্রধান বিদ্যমান।
ডায়াবেটিস রোগীর সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম
ডায়াবেটিস রোগীর সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে তাদের বেশি জানার
আগ্রহ থাকে যাদের বিশেষ করে ডায়াবেটিস রয়েছে বা যাদের পরিবারের আপনজনদের
ডায়াবেটিস রোগটি রয়েছে। তাই এখন আমি আপনাদের সাথে ডায়াবেটিস রোগীদের সজনে
পাতা গুড়া বা পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। ডায়াবেটিস
রোগটি এমনই একটি রোগ যদি এই রোগটি কারো দেহে থাকে তাহলে তার দেহটি যেন ধীরে
ধীরে নষ্ট হতে থাকে। যদি কারো ডায়াবেটিস থাকে তাহলে তার আস্তে আস্তে ব্লাড
প্রেসার বাড়বে, কিডনি নষ্ট হতে পারে ও চোখের সমস্যা হতে পারে।
নানা সমস্যা এসে জর্জরিত হয়ে যাবে শরির যদি কারো ডায়াবেটিস থেকে থাকে। তাই
এখন যে নিয়মগুলি আপনাদের বলব এই পাতা খাওয়ার সেগুলি মেনে এই পাউডার খেলে
ডায়াবেটিস রোগীরা খুবই উপকৃত হব। সজনে পাতায় যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন,
ক্যালসিয়াম, স্নেহ ও লৌহ ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে তাই বুঝতেই পারছেন যেই
খাবারে বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ থাকে সে খাবারগুলি নিয়মিত খেলে আপনার দেহের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। তাই এই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সজনে
পাতার পাউডার যদি
আপনি সকালে খালি পেটে খান এবং এটি যদি নিয়মিত খান তাহলে আপনার ব্লাড প্রেসার
এবং ডায়াবেটিস পুরোপুরি কন্ট্রোলে থাকবে। কেননা এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
এবং আইসোথিয়াকাইনেটস পুষ্টিগুণ যেগুলো রক্তের সুগার লেভেল কে স্বাভাবিক
মাত্রায় নিয়ে আসতে সাহায্য করে যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে
আপনি এই পাউডার প্রতিদিন ৫০ গ্রাম পরিমাণ খাবেন তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
থাকবেন। এই পাতায় রয়েছে ফাইটোকেমিক্যাল নামক একটি উপাদান যা রক্তের শর্করার
লেভেল কে কমাতে সাহায্য করে।
সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার উপকারিতা
সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না তারপরেও এর উপকারিতা
রয়েছে অপরিসীম। এই পাতায় যেহেতু প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে তাই এই
পাতাটি আমাদের নিঃসন্দেহে প্রচুর উপকারে আসবে তা নিশ্চিত করে বলা যায়।
প্রতিদিন আপনি নিয়মিতভাবে এই পাতা অথবা পাতার গুড়া যদি খান তাহলে আপনি উপকার
পেতে থাকবেন প্রতিদিন। এই পাতা আমাদের দেহে যে ধরনের উপকার গুলি করে থাকে তা
নিচে আলোচনা করছেঃ
-
এটি মানব দেহে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে ব্যাপক কার্যকরী ভূমিকা পালন
করে। এটি পুরুষদের টেস্টোস্টেরন নামক হরমোন বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
-
যেহেতু এতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিপ্রধান রয়েছে তাই এটি মানবদেহে রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কার্যকরী ভাবে বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে এতে রয়েছে
অ্যামাইনো এসিড যা দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সকল ধরনের
দুর্বলতা কাটিয়ে তুলতে সাহায্য করে।
- এটি মানুষের দেহের যেকোনো ব্যথা বেদনা কমাতে সাহায্য করে।
-
মানবদেহে এটি বিশেষ করে হার ও দাঁতের সুরক্ষায় ব্যাপক কার্যকরী ভূমিকা
পালন করে।
-
আমাদের হজম এর সমস্যা হলে এই পাতার গোড়ায় যে আঁশ থাকে সে আঁশগুলো আমাদের
হজম প্রক্রিয়াকে সচল করতে সাহায্য করে যার ফলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি
পায় এমনকি আমাদের লিভার ও ভালো থাকে।
-
এটি আমাদের পেটের গ্যাস দূর করতে সাহায্য করে কারণ এই পাউডার আমাদের
পেটের এসিডিটি জ্বালাপোড়া গ্যাস ইত্যাদির সমস্যা দূর করার জন্য ভালো কাজ
করে
-
যদি কোন মানুষের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে তাহলে তার ডায়াবেটিস,
উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের সমস্যা বৃদ্ধি করতে বেশিদিন সময় নেবে না। কিন্তু
এই পাউডার যদি আপনি নিয়মিত খান তাহলে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এতে
করে আপনার ডায়াবেটিসহ, উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের সমস্যা দূরে থাকতে
পারবেন।
-
এটি মানব দেহের হাড়কে মজবুত করতে এবং গঠন করতে সাহায্য করে। কেননা এতে
থাকা খনিজ উপাদান ও ক্যালসিয়াম হাড়কে মজবুত করতে সক্ষম হয়।
-
শারীরিক দুর্বলতা মানুষের অন্যতম একটি অসুখের মধ্যে একটি। এই পাতায় প্রচুর
পরিমাণে রয়েছে প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণ। যা নিয়মিত খেলে মানুষের শারীরিক
সক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।
-
এটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে আর
এ অ্যান্টি-অক্সিডেন্টটি মানুষের চেহারাই বয়সের ছাপ পড়তে সহজে দেয়
না।
-
এই পাউডারে রয়েছে ভিটামিন এ আর এই ভিটামিন এ মানুষের চোখের সমস্যা থেকে
দূরে রাখে।
সজনে পাতা খাওয়ার অপকারিতা
সজনে পাতা খাওয়ার অপকারিতা বা অসুবিধা রয়েছে অনেক। যদি আপনি পরিমিত সজনে
পাতার পাউডার না খান অর্থাৎ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেয়ে ফেলেন তাহলে কিন্তু
এটি আপনার ক্ষতি করতে পারে। আবার আপনার যদি কোন ধরনের রোগ আগে থেকে থাকে তাহলে
এটি না খেলে ও চলে। আর আপনার যদি আগে থেকে কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে এই
পাউডার খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত। তবে আপনি যদি
আমার সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম আর্টিকেলটি পুরোপুরি পড়েন তাহলে
আশা করি আপনি ডাক্তারের কাছে না গিয়ে আমার এই আর্টিকেলেই সজনে পাতার পাউডার
খাওয়ার নিয়ম গুলি পেয়ে যাবেন।
-
আপনাদের মধ্যে যদি কারো ব্লাড প্রেসার থেকে থাকে এবং আপনি যদি নিয়মিত ওষুধ
খান তাহলে এই পাতার পাউডার কখনোই খাবেন না। কেননা ওষুধ খেলে আপনার যেহেতু
প্রেসার কমে যায় আবার এই মরিঙ্গা পাতার পাউডার খেলেও কিন্তু ব্লাড প্রেসার
কমে যা। কাজেই দুই ধরনের ওষুধ একসাথে খাওয়া যাবেনা এটা তো বুঝতেই পারছেন
নিশ্চই। আপনি চাইলে যে কোন একটি খাবেন।
-
এটি পরিমিত খাওয়ার চেষ্টা করবেন কখনোই বেশি খাবেন না আর এটি যদি বেশি খান
তাহলে আপনার বমি বমি ভাব লাগতে পারে, পেট ব্যথা করতে পারে এবং হজমের সমস্যা
হতে পারে।
-
যদি কোন মহিলা গর্ভ অবস্থায় থাকে তাহলে এই পাউডার কোনভাবেই খাওয়া যাবে
না। কারণ এই পাতার সাথে যদি ডালগুলো গুরার সাথে থেকে যায় আর এগুলো যদি
গর্ভবতী মায়েরা খেয়ে ফেলে তাহলে তাদের ক্ষতি করে তাই গর্ভবতী মায়েরা এই
পাউডার খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
-
যদি কারো ডায়াবেটিস থাকে আর সে ডায়াবেটিস রোগী যদি নিয়মিত ওষুধ সেবন করে
ডায়াবেটিসের জন্য তাহলে এ ধরনের রোগী এই পাউডার খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
কেননা সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার পরে আপনার ডায়াবেটিস কমে যাবে। আর
আপনি যদি আগে থেকেই ডায়াবেটিস কমানোর জন্য ওষুধ খেয়ে থাকেন তাহলে দুইটা
একসাথে খেলে আপনার ডায়াবেটিস প্রচুর পরিমাণে লো হয়ে যাবে তখন আপনি বিপদে
পড়বেন। কাজেই দুইটা একসাথে খাবেন না, খেলে যে কোন একটা খাবেন হয় ওষুধ না
হলে সজনে পাতার পাউডার।
সজনে পাতা খেলে কি হয়
সজনে পাতা খেলে কি হয়? এ প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন উত্তর এ
বিষয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে চলেছি। সজনে পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে
প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণ একটি যদি আপনি নিয়মিত সেবন করেন তাহলে আপনাকে কখনো
ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না কেননা আপনি তেমন কোন বড় ধরনের অসুখের করবেন না বলে
ধারণা করা যায়। কারণ এই পাতা যদি আপনি নিয়মিত খান তাহলে যেমন একদিকে আপনার
শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে ঠিক তেমনি যেহেতু প্রচুর পরিমাণে পুষ্টির প্রধান
রয়েছে তাই আপনার শরীরের হাড় খেয়ে ক্ষয় থেকে বাঁচাবে এবং পুনর্গঠনের সহায়তা
করবে। আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে যাতে করে আপনি যে ধরনের
খাবার খান না কেন তা সহজে হজম হয়ে যা। আর আপনার যদি হজম শক্তি ভালো থাকে তাহলে
আপনার শরীর সুস্থ থাকবে সহায়তা করবেন। সজনে পাতায় যেহেতু ভিটামিন সি এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আপনার ত্বকের তারুণ্যতা ধরে রাখে। এই পাতা
নিয়মিত খেলে আপনি শারীরিকভাবে সুস্থতা লাভ করবেন। যার ফলে আপনার কোন ধরনের
অসুখ আসতে পারবে না আর যার কারণে আপনাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না। তবে এটি
পরিমিত খেতে হবে প্রতিদিন ৫০ গ্রাম করে খাব। আর নিয়মিত খেলে যদি দেখেন কোন
সমস্যা হচ্ছে তাহলে ১০ দিন বা ১৫ দিন খাওয়ার পরে কিছুদিন খাওয়া বন্ধ রাখবেন।
দাম কত সজনে পাতার গুড়ার
দাম কত সজনে পাতার গুড়ার? যদিও আপনি চাইলে এই পাতাটি কোন এক গ্রামে গেলে
বিনামূল্যে পেয়ে যাবেন এবং এটিকে রৌদ্রে প্রাকৃতিকভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করে
অনেকদিন খেতে পারবেন। তবে আপনি যদি শহরে বাস করে থাকেন তাহলে এই পাতা সংগ্রহ
করা আপনার জন্য অসম্ভব একটি ব্যাপার। সে ক্ষেত্রে আপনাকে এই পাতাগুলি বা পাতার
পাউডার কোন এক অনলাইন মাধ্যম থেকে বা কোন দোকান থেকে কিনতে হবে। বর্তমানে
বিভিন্ন দেশে এই পাতার পাউডার বানিয়ে অর্গানিক খাবার হিসেবে এটিকে বিক্রি করা
হচ্ছে অনেক
চরম মূল্যে। আপনি এটিকে আমাদের দেশেও বিভিন্ন দোকানে বা অনলাইন মাধ্যমে দেখবেন
তারা বেশ চরম মূল্যে এই পাউডারটি বিক্রি করে থাকে কেননা অনেকেই জানে যে এই
পাউডারটি প্রচুর পরিমাণে মানব দেহের জন্য উপকারী একটি খাবার। তবে অনেক জায়গায়
মোটামুটি হাতের নাগালের মধ্যে এর দাম থাকে যেমন ৫০০ গ্রাম পাউডারের দাম ৬৫০
টাকা থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে কিছু কিছু জায়গায় পাওয়া যায়। তবে বিভিন্ন
জায়গায় এর দাম যাচাই করার পর আপনি যদি যদি কিনেন যেখানে দাম কম মনে হবে সেখান
থেকে কিনবেন।
ত্বকের যত্নে সজনে পাতার ব্যবহার
ত্বকের যত্নে সজনে পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আপনাদের দৃষ্টিতে জানাতে চলেছি। এই
পাউডারকে সুপারফুট বলা হয় কেননা এই পাউডারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন,
ক্যালসিয়াম এবং খনিজ যার ফলে এটি নিয়মিত খেলে আপনার শুধু দেহেরই উপকারে আসে
এমনটি নয় বরং দের উপকারের পাশাপাশি আপনার ত্বকের যত্নে বিশেষ উপকারে আসে এটি।
কেননা এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। যা আপনার
ত্বকের যত্ন করে অর্থাৎ আপনার ত্বককে আপনার বয়সের তুলনায় কম দেখাতে
সাহায্য করে এবং আপনার ত্বককে উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় দেখায়। যদি আপনার ত্বকে কোন
সমস্যা থাকে যেমন ব্রণ বা মেস্তার দাগ থাকে তাহলে এর পাউডারকে যদি আপনি
পেস্ট বানিয়ে ব্যবহার করেন তাহলে ব্রণ ও মেস্তার দাগ দূর হবে। বর্তমানে বাজারে
বিভিন্ন দামি দামি ব্র্যান্ডের ক্রিমগুলোতে এর পাউডার ব্যবহার করা হয়। আপনাকে
মুখের দাগ দূর করার জন্য দামী দামী ব্র্যান্ডের ক্রিম অযথা কিনে আর মারতে হবে
না। আপনি যদি চান তাহলে আজ থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে আপনারই ত্বকের যত্ন
নেওয়ার জন্য
সজনে পাতার পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যদি এই পাউডারকে ফেস মাস বানিয়ে
ব্যবহার করেন তাহলে বেশ উপকৃত হবেন। ফেস মাস্ক বানানোর জন্য আপনাকে এক
টেবিল চামচ পাউডার এর সাথে দুই টেবিল চামচ দই মেশাতে হবে এরপর এটিকে আপনার
ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ফেস মাস্ক কিভাবে। যদি মনে করেন যে আপনার তো প্রচুর
পরিমাণে ট্রাই হয়ে থাকে তাহলে আপনি এই পাউডারের সাথে দুই টেবিল চামচ মধু
মেশিয়ে নিয়ে এটিকে পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন তারপরে দেখুন এর জাদুকরি
কার্যকরিতা।
শেষ কথাঃ সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম
একসময় এই সজনে পাতা শুধুমাত্র গ্রামে লোকজন এর কদর করত শহরের লোকজন এই পাতা
দেখলে কেমন জানি নাক ছিটকাতো। অর্থাৎ শহরের লোকজন এই পাতা দেখলে মনে হয় যেন
তাদের গায়ে কেউ কাদা ছিটিয়ে দিয়েছে এরকম একটি ভাব ধরত। কিন্তু যেহেতু বর্তমান
চিকিৎসাবিদরা এই সজনে পাতার বহু গুণ সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপন করেছে। তারপর থেকে
বর্তমানে শহরের লোকজনের ভিতরে এই সজনে পাতার পাউডার খাওয়া এবং ব্যবহার করার
আগ্রহো দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর
এই সুযোগে এর দাম এই কারণে অনেকেই অনেক
বেশি নিয়ে থাকেন।সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এই পোস্টের
বিস্তারিত বলা হয়েছে যাতে করে আপনারা এটি খাওয়ার আগে সচেতন হতে পারে। যেহেতু
এতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ বিদ্যমান রয়েছে তাই এটি কখনোই বেশি পরিমাণে
খাবেন না। পাউডারটি যদি আপনি প্রতিদিন খান তাহলে ৫০ গ্রাম করে খাবেন যদি মনে
করেন আপনার সমস্যা হচ্ছে তাহলে এটি খাওয়া কিছুদিনের জন্য বন্ধ করতে পার।
শিক্ষাই আলোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url