লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা

লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা যেমন রয়েছে তেমন এর ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। এই ফল কিভাবে খেলে আপনার স্বাস্থ্যের কোন কোন বিষয়ে ভালো কাজ করবে এবং কখন খেলে আপনি বেশি লাভবান হবেন, শিশু থেকে বয়সকরা এই ফল
লাল-ড্রাগন-ফলের-উপকারিতা
খেয়ে কিভাবে উপকৃত হবে এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি আপনাদের সাথে। এই ফলটি কে পুষ্টির পাওয়ার হাউস বলা হয়, এই বিদেশি ফলটি শুধু দেখতেই আকর্ষণীয় নয় এর ভেতরের রয়েছে অসংখ্য পুষ্টিগুণ এবং  বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা থেকে প্রাকৃতিক ভাবে সমাধান।

পেজ সূচিপত্রঃ  লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা

লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা

লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা এ বিষয়ে আমি আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি। আমরা হয়তোবা অনেকেই জানি যে আমাদের হজম শক্তি যদি ভালো না থাকে তাহলে আমরা যতই পুষ্টিকর খাবার খাই না কেন আমরা শারীরিকভাবে দুর্বল থাকবো এবং ঘন ঘন অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হব। কাজেই আপনার যদি পরিপাকতন্ত্র অর্থাৎ হজম প্রক্রিয়াকে সর্বদা সক্রিয় রাখতে চান অথবা পুনর্গঠন করতে চান তাহলে আপনার প্রয়োজন হবে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, আর এই ফাইবার রয়েছে এই লাল ড্রাগন ফলে। এবং আপনার হজম শক্তিকে শক্তিশালী করে আপনার ভেতরের কোষ্ঠকাঠিন্য কে দূর করে। এমন একটি উপাদান রয়েছে যে উপাদানটি আমাদের শরীর তৈরি করতে পারে না আর সেটি হলো ওমেগা ৩। এই উপাদানটি যদিও আমরা মাছ থেকে পেয়ে থাকি তবে 

এই লাল ড্রাগন  ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩। তাই অন্য যেকোন ফল বা খাদদের চেয়ে আপনি যদি এই  ফলটি খান তাহলে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ পেতে পারেন। নারীদের একটি সমস্যা রয়েছে আর সেটি হল পিসিওএস এ সমস্যাটি দূর করার জন্য পুষ্টিবিদরা ওমেগা থ্রি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন এবং এটি অবেসিটি নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি আপনার দেহের কোলেস্টেরলের পরিমাণকে পরিমিত রাখে যার ফলে আপনার শক্তিশালী হার্ট এর কার্যক্ষমতা নিশ্চিত করে। এটিতে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার যা আপনার দেহের খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এবং এর পাশাপাশি আপনার দেহের ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহেব ভূমিকা পালন করে। এই ফলে যেহেতু পরিমাণমতো ক্যালরি এবং উচ্চ পরিমাণে 

ফাইবার থাকার ফলে আপনার শরীরের ওজন স্বাভাবিক রাখতে সক্ষম করে। এতে থাকা ভিটামিন সি যা আপনার শরীরে ক্লোজেন উৎপাদন করে এবং এই ক্লোজনের ফলে আপনার লাবণ্যময় ত্বকের জন্য বেশ ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ আপনার চেহারাকে দীর্ঘদিন সুন্দর কমল ও আকর্ষণীয় করে তুলতে সাহায্য করে। এ ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং পানির উপাদান যা আপনার ত্বককে শুষ্কতা থেকে দূরে রাখে বলিরেখা কমিয়ে ফেলে যার ফলে আপনার চেহারায় বার্ধক্য এর ছাপ পড়তে দেয় না। এ ফলে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম এর মত উপাদান যা আপনার দেহের শক্তিশালী হাড় গঠনের জন্য এবং আপনার দাঁতকে মজবুত রাখার জন্য অপরিহার্য অংশ হিসেবে কাজ করে।

লাল ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম

লাল ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম এ বিষয়ে জেনে নেওয়া আমাদের প্রত্যেকেরই তুই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। কেননা এই ফলটি যেহেতু বাইরে থেকে আমদানিকৃত এখন এই ফলটি আমাদের দেশে চাষ করা হচ্ছে তারপরেও ফল দিবে পানিতে ডুবিয়ে রেখে সুন্দর করে ধুতে হবে নিতে হবে এরপর এর ফলটিকে পরিষ্কার একটি পাথরে রেখে দুই ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। এরপরে আপনি চাইলে একটি চাকু দিয়ে চামড়া না ছাড়িয়ে কিউব আকৃতির করে কেটে নিতে পারেন এরপর চামড়া ধরে টান দিলে লাল ড্রাগন ফলটি সুন্দর মত আপনার পাত্রে চামড়া থেকে খুলে যাবে কাটা অবস্থায়। আবার আপনি যদি চান দুইভাগ করে নেয়ার

পরে চামড়াটি ধরে টান দিলে এটা সুন্দর মত এ ফলের মাংস থেকে চামড়াটি চলে আসবে। এরপর কাটা অংশটিকে পরিষ্কার একটি পাত্রে আপনার মত সুন্দর ডিজাইন করে কেটে নিয়ে পরিবেশন করুন। আপনি যদি প্রতিনিয়ত এটিকে এভাবে কেটে খেয়ে কিছুটা বোরিং ফিল করেন তাহলে আপনি চাইলে এই ফলটিকে আরো আকর্ষণীয় ও লোভনীয় করে পরিবেশন করতে পারেন যেমন এটিকে আপনি চাইলে জুস বানিয়ে পরিবেশন করলে এটি দেখতে চমৎকার ও আকর্ষণীয় লাগঅবে। আপনি যদি এটিকে জুস বানাতে চান তাহলে শুধু এই ফলের জুস বানাতে পারেন অথবা আপনি 

চাইলে এই ফলের সাথে কারো অন্য কিছু ফল এবং দুধ মিশাতে পারেন এবং সাদ বাড়ানোর জন্য কিছু পরিমাণ চিনি মিশাতে পারন। এই ফলের সাথে বিভিন্ন রকমের ফলগুলি ভালোভাবে কেটে নিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিলে পেয়ে যাবেন আপনার কাঙ্খিত জুস। আপনি যদি চান শুধু ড্রাগন ফলের জুস খেতে পারেন অথবা বিভিন্ন ফলের সাথে মিশিয়ে বিভিন্ন ফলের সদজুক্ত জুস উপভোগ করতে পারেন। এতে করে আপনার জিহ্বার সাদ প্রতিনিয়ত বাড়বে এবং বিভিন্ন সাদ সংযুক্ত খাবার খেলে আপনার মন ও মস্তিষ্ক চাঙ্গা থাকবে।

এই লাল ড্রাগন ফল সম্পর্কে অজানা তথ্য

এই লাল ড্রাগন ফল সম্পর্কে অজানা তথ্য যা আমাদের প্রত্যেকেরই অবগত হওয়া খুবই জরুরী। যদিও আমরা ইতিমধ্যে জেনেঅগেছি যে এই ফলটির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। তবে আমাদের এখন জানতে হবে যে এই ফলটি কোন দেশে সর্বপ্রথম চাষ করা হতো এবং মূলত কোন কোন দেশে এই ফলটি সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। চলুন আমি আপনাদের সাথে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করছি। ফলটি লাল এবং এর আকৃতি এতটাই আকর্ষণীয় যে যদি কেউ এটিকে দেখে তাহলে তা খাওয়ার জন্য মনের ভিতর প্রচন্ড রকমের একটি আকুলতার সৃষ্টি হয়। বাইরেটা যেমন লাল ভেতরটাও তেমন লাল ও কিছুটা ফোটায় ফোটায় কালো আকৃতির। এই ফলটি গ্রীষ্মকালীন একটি ফল যা সর্বপ্রথম আমেরিকাতে চাষ করা হয় এবং এর বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে Hylocereus Undatus।

এই ফলের গাছটি দেখতে পুরোটাই ক্যাকটাস জাতীয় গাছের মতো এবং এই ফলটি বর্তমান সময়ে থাইল্যান্ড, আমেরিকা, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, ইসরাইল এবং ভিয়েতনামে প্রচুর পরিমাণে চাষ করা হছে। এই ফলটি সারা বিশ্বে এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যে বর্তমানে আমাদের দেশেও বিভিন্ন স্থানে এ ফলটি চাষ করা হচ্ছে। এর পোস্টে গুন প্রচুর পরিমাণে হওয়ার ফলে আমাদের দেশে চাষ করে আমাদের দেশেও মানুষের চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে খুবই স্বল্পমূল্যে। লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে এই ফলে থাকা পুষ্টি উপাদান, উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব। তাই এই পোস্টটি পুরোঅটায় মনোযোগ দিয়ে পড়ুন তাহলে এটা আপনার দৈনন্দিন জীবনে অনেক উপকারে আসবে।

যেসব পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা রয়েছে লাল ড্রাগন ফলে

যেসব পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা রয়েছে লাল ড্রাগন ফলে এগুলো প্রশ্ন অনেকেরই মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। তাই আমি এখন আপনাদের সাথে এ ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। প্রত্যেকটি খাবার এবং ফলে প্রাকৃতিক অনেক ধরনের শক্তি রয়েছে যেগুলোকে আমরা বলে থাকি পুষ্টিগুণ। এই পুষ্টিগুণ ছাড়া আমাদের দেহ অচল। আমরা কোন কাজ করতে পারবো না কোন কিছু চিন্তাভাবনা করতে পারবো না, কেননা আমাদের মস্তিষ্ক অচল হয়ে পড়বে। কাজেই কোন ফলে কোন ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে তা জেনে নেওয়া খুবই অপরিহার্য একটি বিষয়। ফল ও বিভিন্ন ধরনের খাদ্য হচ্ছে আমাদের দেহের চালিকাশক্তি অর্থাৎ
লাল-ড্রাগন-ফলের-উপকারিতা
অপরিহার্য অংশ। বিভিন্ন ধরনের ফল বা খাবার খেয়ে আমরা আমাদের শরীরে শক্তি যোগাতে পারি, মস্তিষ্ককে চাঙ্গা রাখতে পারি অর্থাৎ কাজের জন্য উপযোগী করে তুলতে পারি। কোন ফলে কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে তা জানলে আমরা আমাদের শরীরের কোন ধরনের পুষ্টির ঘাটতির কারণে যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে সেই ফলগুলো খেয়ে আমরা আমাদের শারীরিক সমস্যা গুলো নিজেরাই সমাধান করতে সক্ষম হবে। তাহলে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানা কথাটা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। চলুন তাহলে জেনে নেই এতে কি কি পুষ্টিগুণ ও উপাদান রয়েছেঃ
  • ক্যালরিঃ এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি যে উপাদানটি আপনার রক্তের অতিমাত্রার চর্বি কমানোর জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই ফলটি নিয়মিত যদি আপনি খান তাহলে আপনার শরীরের বাড়তি ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। কাজে আপনাদের মধ্যে যদি কারো শরীরের ওজন দিন দিন বাড়তে থাকে তাহলে সেই ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে এই লাল ড্রাগন ফলটি নিয়মিত খেতে পারেন।
  • ক্যালসিয়ামঃ এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম গানটি আপনার শরীরের শক্তি যোগানোর জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর ক্যালসিয়ামের ফলে আপনার দাঁত, হাড় ও চুল এ সমস্ত কিছু মজবুত হয়।
  • আইরনঃ আয়রন এমন একটি উপাদান যার আমাদের শরীরের প্রধান শক্তি তালিকা অর্থাৎ আমাদের শরীরে প্রচন্ড পরিমাণে শক্তি যোগায় এবং যারা অনেক বেশি পাতলা ও রোগা তাদের জন্য এ আয়রন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এ আয়রনের ফলে আপনার দেহের ওজন কম থাকলে তা বাড়াতে সাহায্য করবে। আর এই উপাদানটি মাতৃদুগ্ধ কালে গর্ভবতী সময়ে এবং বাড়ন্ত শিশুদের জন্য অথবা কোন অপারেশনের ফলে শরীরে রক্তের ঘাটতি হলে এই ফলে বদ্যমান আয়রন প্রচুর কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
  • ফাইবারঃ এতে থাকা ফাইবার আপনার সুস্থ পরিপাকতন্ত্র পুনর্গঠনের জন্য সাহায্য করে। অর্থাৎ এটি আপনার হজম শক্তিকে সর্বদা কার্যকর রাখতে সাহায্য করে এর ফলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং আপনার খাবার খাওয়ার চাহিদা যথার্থ থাকে। এমনকি এটি উপাদানের ফলে আপনার শক্তিশালী হার্ট পুনর্গঠনেও ভূমিকা পালন করে। এবং এর ফলে আপনার শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
  • ওমেগা ৩ঃ এই উপাদানের ফলে নারীদের পিসিওএস সমস্যা সমাধান করে এবং শরীরের মেদ কমাতে সাহায্য করে। এই উপাদানটি আমাদের শরীর তৈরি করতে পারেনা। ওমেগা থ্রি উপাদানটি পেতে হলে আমাদেরকে বাইরের খাবার থেকে এটি সংগ্রহ করতে হয়।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার সুন্দর ত্বকের জন্য বেশ ভূমিকা পালন করে
  • ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি থাকার ফলে আপনার শরীরের যেকোনো ধরনের কাটা ছেঁড়া এমনকি ক্ষত স্থানকে সহজে সারিয়ে তোলার জন্য ব্যাপকভাবে ভূমিকা রাখে। শরীরের কোন অংশ কাটা ছেঁড়া বা পুড়ে গেলে সেই স্থানটা নতুন চামড়া উৎপাদন হয়ে পূরণ করে ফেলে আর এটি সম্ভব হয় ভিটামিন সি এর কারণে।

আসল ড্রাগন ফল চেনার উপায় ও দাম কত

আসল ড্রাগন ফল চেনার উপায় ও দাম কত এ বিষয়ে ধারণা নিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কেননা আপনি যদি আসল ড্রাউন ফল না চিনেন এবং এই সম্বন্ধে যদি আপনার কোন ধারণা না থাকে তাহলে আপনি বাজারের ড্রাগন ফল কেনার নামে বিষ কিনছেন কিনা সে বিষয়ে ধারণা নেয়া দরকার। কেননা কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই ব্যাপক জনপ্রিয় ফলটিকে নিয়ে দুইনাম্বারী ব্যবসা শুরু করে ফেলেছে। বেশ কিছু বছর আগেই যেখানে এই ফলটি আমাদের দেশের বাইরে থেকে আমদানি করে নিয়ে আসা হতো। কেননা এই ফলটি আমাদের দেশে চাষ হতো না, সে সময় এর আকার ছিল ছোট মাথায় ফুল ছিল, ছিল পুরোটাই লাল আর যেটি ছিল আসল ড্রাগন ফল। কিন্তু আমাদের দেশে 

এর চাহিদা এবং প্রচুর হওয়ার ফলে এটি প্রায়ার২০১০ সালে আমাদের দেশে চাষ শুরু হয় এবং এর চারা নিয়ে আসা হয়েছিল ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ড থেকে। এবং এর চাষ বেশ কিছু বছর ধরে বহু গুনে গুণান্বিত হওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা এ ফলটিকে চাষ করার সময় বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক এবং সার দিয়ে দ্রুত বড় করার জন্য এইসব করে থাকেন। এমনকি সার ও বিশ দেয়ার ফলে এই ফলটিকে আকারে অনেক বড় ও ওজনে বেশি করে ফেলেছে। প্রথমে যার সাইজ ছিল ছোট প্রায় এর ওজন ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম হতো কিন্তু এখন বর্তমানে শার ও বিষ প্রয়োগ করার ফলে এর ওজন  এক একটি প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম

অব্দি পৌঁছে গিয়াছে। এই ফলটি চাষ করার সময় ছাড় ও কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে এটি এখন লাল ও সবুজ রঙের হয়ে গিয়েছে যা আগে দেখতে ছিল পুরোটাই লাল। অসাধু ব্যবসায়ীরা সার ও কীটনাশক মিশিয়ে দ্রুত এটিকে বাজারে নিয়ে আসার জন্য এই পন্থা অবলম্বন করে থাকে। কাজেই আপনারা ড্রাগন ফল কেনার সময় অবশ্যই আকারের ছোট ও যেগুলো দেখতে লাল সেগুলো কেনার চেষ্টা করবেন। আর বর্তমানে ড্রাগন ফল এর দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার প্রতি kg মধ্যে পাওয়া যায়। যদিও এর দাম বিভিন্ন সময় একটু ওঠানামা করে তারপরও এর দাম হাতের নাগালেই থাকে।

এই ড্রাগন ফলের পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ

এই ড্রাগন ফলের পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ অর্থাৎ প্রতি এক গ্রাম বা ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলে কি পরিমাণে কোন পুষ্টি উপাদান রয়েছে এ বিষয়ে আমি এখন আপনাদের সাথে আলোচনা করব। এই ড্রাগন ফলটি আমেরিকান, থাইল্যান্ড এবং ফিলিপাইন সহ আরও অন্যান্য দেশে ব্যাপক জনপ্রিয় একটি ফল। এমনকি আমাদের দেশেও এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠেছে। দেখতে আকর্ষণীয় বাহিরের অংশ লাল এমনকি ভেতরের অংশ লাল, নরম ও সুস্বাদু হওয়ার ফলে এই ফলটিতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ পুস্টিগুন ও উপাদান। নিম এ ফলে কোন কোন উপাদান কি কি পরিমাণে রয়েছে তা নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
উপাদানের নাম প্রতি গ্রামে উপাদানের পরিমাণ
ক্যালোরি প্রতি ১০০ গ্রামে ৫০-৬০ গ্রাম
ফ্যাট প্রতি ১০০ গ্রামে ০.১ গ্রাম
জলীয় অংশ প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৯০ গ্রাম
প্রোটিন প্রতি ১০০ গ্রামে ১.১ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট প্রতি ১০০ গ্রামে ১১-১৩ গ্রাম
ভিটামিন সি প্রতি ১০০ গ্রামে ৪ গ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম প্রতি ১০০ গ্রামে ৬৫ গ্রাম
আয়রন প্রতি ১০০ গ্রামে ০.০১ গ্রাম
ফাইবার প্রতি ১০০ গ্রামে ৩ গ্রাম
আঁশ প্রতি ১৭০ গ্রামে ৫ গ্রাম
শর্করা প্রতি ১৭০ গ্রামে ২২ গ্রাম
চর্বি প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ০.৬০ গ্রাম
চিনি প্রতি ১৭০ গ্রামে ১৩ গ্রাম
ভিটামিন এ (IU) প্রতি ১৭০ গ্রামে ১০০ IU

আপনার ডায়েটে কিভাবে লাল ড্রাগন যুক্ত করবেন

আপনার ডায়েটে কিভাবে লাল ড্রাগন যুক্ত করবেন এ বিষয়গুলো জেনে তারপর আপনি চাইলে আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় এটি যুক্ত করে খেতে পারেন। এই ফলটি প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি গুণে ভরপুর হওয়ার ফলে যদি কেউ নিয়মিত এই ফলটি খায় তাহলে সে আর কোন শারীরিক সমস্যায় সহজে পড়বে না আর যার কারণে তাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না। নিয়মিত প্রাকৃতিক পুষ্টিগুনে ভরপুর ফলমূল খেলে ডাক্তারের কাছে যাওয়া থেকে দূরে থাকতে পারবেন এবং ডাক্তারের খরচ বাঁচাতে পারবেন। আর যার কারণে ডাক্তাররা বলে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খেলে ডাক্তারের খরচ বেঁচে যায়। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত হবে যে ধরনের খাবার গুলিতে ভরপুর পুষ্টিগুণ বিদ্যমান থাকে সেই ধরনের খাবার গুলো বেশি বেশি খাওয়া।
লাল-ড্রাগন-ফলের-উপকারিতা
  • ফ্রেশ ফল খাওয়াঃ এই ফলটিকে যদি আপনি বাজার থেকে ফ্রেস তাজা দেখে কেনে আনতে পারেন এবং সেটিকে বেশি দেরি না করে সাথে সাথেই ভালোভাবে ধুয়ে কেটে খেয়ে ফেলেন তাহলে এর আসল ও প্রাকৃতিক স্বাদ আপনি গ্রহণ করতে পারবেন। আপনি এটিকে চাইলে এর সালাত বানিয়ে খেতে পারেন। সালাত বাড়ানোর সময় এটির সাথে গাজর, টমেটো ও শসা মিশিয়ে কিছুটা অন্যরকম সাদ যুক্ত করার জন্য কিছুটা পিঙ্ক সল্ট মিশাতে পারেন। এভাবে তৈরিকৃত সালাতটি আপনি চাইলে দিনের যেকোনো সময়ই খেতে পারেন পাশাপাশি দিনের তিন বেলা খাবারের সাথে এটিকে যুক্ত করতে পারেন।
  • জুস বানিয়ে খাওয়াঃ এই ফলটির বাহিরে যেমন দেখতে আকর্ষণীয় ঠিক তেমনি এর ভেতরটাও প্রচুর লোভনীয়। যার ফলে এটিকে যদি আপনি জুস বানান তাহলে সেই জুসটিও দেখতে অনেক লোভনীয় লাগে। যার ফলে এটিকে যদি আপনি জুস বানিয়ে খান তাহলে ছোট বড় সবাই এটি খেতে খুবই পছন্দ কর। তাই এই ফলটিকে যদি কেউ খেতে অপছন্দ করে বিশেষ করে বাচ্চারা অনেক সময় আসতো কোন ফল খেতে চাই না বা তারা এটিকে কামরিয়ে খেতে সক্ষমও হয় না। তাই তাদেরকে যদি জুস বানিয়ে দেন তাহলে তারা আগ্রহের সাথে খেতে চাইবে।
  • ডেজার্ট হিসেবে খাওয়াঃ যারা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করে তাদেরকে এটি আকর্ষণীয় ও সুন্দরভাবে কেটে পরিবেশন করলে এই ফলটি তাদের মিষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদাও পূরণ করবে। অনেকে আছে প্রতিদিনের তিন বেলা খাবার খাওয়ার পরে মিষ্টি খেতে পছন্দ করে আপনি চাইলে খাবারের পরেও এটিকে পরিবেশন করতে পারেন। কেননা ডাক্তাররা বলে থাকেন তিন বেলা খাবার খাওয়ার পরে কিছুটা ফল খাওয়া শরীরের জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর।

ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক

ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক যদিও এ ফলে তেমন কোন ক্ষতিকারক দিক নেই তারপরও যদি কারও শরীরে আগে থেকে কোন ধরনের রোগ বালাই থেকে থাকে তাহলে তাদের জন্য এটি বেশি পরিমাণে খাওয়া ঠিক হবে না, খেতে পারেন তবে কম করে খেতে হবে। তারপরেও প্রত্যেকটি খাবার খাওয়ার কিছুটা নিয়ম রয়েছে ভালো লাগলেই ইচ্ছা মত খাওয়া যাবে না এটিকে পরিমাণ মতো খেতে হবে। আর পরিমাণ মতো না খেলে এটি আপনার ক্ষতি করতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নেই এই ফলের ক্ষতিকারক দিক গুলো হলোঃ
  • ঔষধি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ এই ফলে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের ভরপুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। তাই এটি অনেক সময় ঔষুধের কাজ করে থাকে যদি কারো উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা থেকে থাকে এবং এই সমস্যার জন্য ওষুধ খেয়ে থাকেন তাহলে এই রোগীরা এটিকে খুবই সীমিত পরিমানে খাবে।
  • এলার্জিজনিত সমস্যাঃ যদি কারো এলার্জিজনিত সমস্যা থেকে থাকে তাহলে এই ফল যদি কেউ খায় তাহলে তার এলার্জি বাড়তে পারে যেমন বেশি বেশি ফোলা ভাব দেখা দেওয়া শরীরে এবং চুলকানোর লক্ষণ গুলো বেশি পরিমানে দেখা দিতে পারে। কাজে যাদের এলার্জিজনিত সমস্যা আছে তারা এই ফলটি পরিমাণ মতো খাবে।
  • হজমের সমস্যাঃ এই ফলে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা আপনার হজম শক্তি কেউ বাড়িয়ে তোলে। আর আপনি যদি এই ফলটি বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার পায়খানার সমস্যা হতে পারে অর্থাৎ ঘর ঘন পায়খানা হতে পারে। বমি বমি ভাব লাগতে পারে এবং মাথা ঘুরতে পারে।
  • কিডনিতে পাথরঃ যদি কারো আগে থেকেই কিডনিতে পাথরের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে এই ফল খাওয়া ঠিক হবে না। কেননা এই ফলে একটি পুষ্টি উপাদান রয়েছে আর সেটি হল অক্সালেট যেটি কিডনিতে থাকা পাথরকে আরো বৃদ্ধি করতে পারে। কাজেই যাদের কিডনিতে পাথর আছে তারা এ ফলটি একদমই খাবেন না।

লেখকের মন্তব্যঃ লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা

লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আমি আপনাদের সাথে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আমার এই আর্টিকেলে। এই ফলটি যেমন দেশের বাহিরে এর আকার ও রঙের জন্য বেশ জনপ্রিয় ঠিক তেমনি আমাদের দেশেও এই ফলটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। এমনকি এই ফোনটি আমাদের দেশে বিভিন্ন জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় আর যার কারণে এই ফলটি আমরা আমাদের দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ফলের দোকানের দেখতে হয় যার দামও বেশ হাতের নাগালেই থাকে। আর যেহেতু এই ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে এবং এর দামও বেশ ।

কাজে এই ফলটিকে আমরা আমাদের প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখলে আমাদের বিভিন্ন বয়সের মানুষ এমনকি ছোটরাও উপকৃত হবে। কেননা এই ফলটি নিয়মিত খেলে শরীর মন সবকিছুই সুস্থ সবল থা। আর আপনি যদি সুস্থ সবল থাকেন তাহলে আপনাকে অযথা ডাক্তারের কাছে গিয়ে আপনার কষ্টার্জিত টাকা খরচ করতে হবে না। এই ফলে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে তা এই ফলটিকে প্রতিদিন খাওয়া উচিত তবে এটিকে কোনোভাবেই বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবে না। আবার যারা ডায়াবেটিকস ও উচ্চ রক্তচাপ এর মত রোগে আক্রান্ত হয়ে আছেন এবং নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছেন তারা এ ফলটি খুবই কম পরিমাণে খাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শিক্ষাই আলোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url